সৌদি থেকে ফিরে মিথ্যে গল্প বানিয়েছে নারীরা: নমিতা



সম্প্রতি কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে যাওয়া বহু নারী সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরত এসেছেন। দেশে ফিরে তারা শুনিয়েছেন ভয়াবহ নির্যাতনের কথা। তারা অভিযোগ করেছেন তাদেরকে সর্বপ্রকার নির্যাতনই সেখানে করা হয়েছিল।
তবে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার বলছেন, যারা দেশে ফিরছেন, তাদের অধিকাংশই নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরছেন না। বরং দেশে ফিরে নির্যাতনের গল্প বানাচ্ছেন।

মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুরে একটি সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা বলেন সচিব নমিতা হালদার।

নমিতা হালদার জানান, বাংলাদেশ থেকে নারীরা সৌদি যাচ্ছেন। সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে অনেকেই খাপ খাওয়াতে পারে না। যারা সৌদি যায়, তাদেরকে তো জেনেই যেতে হবে, তারা বাসি রুটি খায়। ভিন্ন পরিবেশ দেখে অনেক নারী গিয়েই কান্নাকাটি শুরু করে দেয় দেশে ফেরার জন্য।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবে ২০০৮ সালের পর বাংলাদেশ থেকে নারী শ্রমিক যাওয়া অনেকটাই বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৯ সালে ৩৮৬, ২০১০ সালে ৪৪, ২০১১ সালে ১৬৬, ২০১২ সালে ৪৮৪, ২০১৩ সালে ১৬৭ ও ২০১৪ সালে ১৩ জন নারী শ্রমিক সৌদি আরবে যান।

২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরবের শ্রমবাজার আবার খুলে যায়। এই বছরই ২০ হাজার ৯৫২ জন নারী সৌদি যান। ২০১৬ সালে আগের বছরের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেড়ে ৬৮ হাজার ২৮৬ জন, ২০১৭ সালে ৮৩ হাজার ৩৫৪ জন নারী শ্রমিক সৌদি আরবে যান।

চলতি বছরের শুরুর চার মাসে বাংলাদেশ থেকে ৩০ হাজার ১০২ জন নারী সৌদি আরব গেছেন। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে এ বছর বাকি আট মাসে আরও ৬০ হাজার নারী সৌদি যাবেন। এই সংখ্যাটা ২০১৭ সালের চেয়েও বেশি।

সৌদিতে নারী শ্রমিকদের যাওয়ার হার যেমন প্রতি বছর বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে সেখানে তাদের ‘নির্যাতনের শিকার হওয়া’র ঘটনাও। গত ২০ মে, রবিবারও ২১ জন নারী সৌদি থেকে দেশে ফিরেছে। তারা অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

এ বিষয়ে নমিতা হালদার বলেন, ‘গত পরশু সৌদি থেকে ২১ জন দেশে এসেছে। তাদেরকে কোনো ধরনের নির্যাতন করা হতো না।’

অনেকে অভিযোগ করছেন তাদেরকে নির্যাতন করা হতো। এ বিষয়ে সচিব বলেন, ‘আপনারা গিয়ে খবর নেন।’

‘দেশে ফিরে দে জাস্ট মেক স্টোরি (তারা গল্প বানায়)। ভালো লাগে না, চলে যাও। কিন্তু এত বড় চুক্তির অধীনে যে তারা গেছে, যাওয়ার সময় দেশ থেকে এসব তাদের বলা হয় না। রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি শুধু তাদেরকে (নারীদের) বলে দেয়, তিন মাস তুই বেড়াই আয়’, বলেন নমিতা।